আইন মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করার পদ্ধতি ।।
নোটারি ও অনুবাদঃ
আমি সিলেট থেকে নোটারী বা অনুবাদ করে নিয়ে যাইনি। তাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ঐখানে করিয়েছিলাম একজনকে সিরিয়াল রাখার জন্য বলে গিয়েছিলাম। সকাল ৮টার দিকে রাস্তায় টেবিল-চেয়ার নিয়ে অনেকে বসে থাকে এই কাজগুলোর জন্য বা মেইন রোডের পাশে অনেক দোকান আছে। নোটারী করেছিলাম ২০ টাকা প্রতি পেইজ করে। জাতীয় পরিচয়পত্র ইংলিশে ট্রান্সলেশন এর জন্য ১০০টাকা নিবে। নোটারি করবেন জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ইংলিশে ট্রান্সলেশন কপি ইত্যাদি।।
আইন মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িতঃ
আইন মন্ত্রণালয়ও একই বিল্ডিংয়ের ১১তলায় তথা লিফটের ১০। প্রথমেই একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা মাথায় রাখবেন যে আইন মন্ত্রণালয়ে যেসব ডকুমেন্টস সত্যায়িত করাবেন সব গুলোর সেইম আরেক সেটকপি সাথে রাখবেন এইসেট আইন মন্ত্রণালয় জমা দিতে হয়। ( এগুলো নোটারী বা কিছু করা লাগবে না শুধু ফটোকপি করে নিবেন)। তারপর আপনি ১১ তলায় গিয়ে ফাইল জমা দিবেন, এখানে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ফাইল জমা নিয়ে থাকে। আপনাকে একটা টোকেন দিবে এটায় সিরিয়াল নাম্বার লেখা থাকবে এবং আপনার জমা দেয়া ডকুমেন্টস এর এক পেইজ এর মধ্যে একটা সিল দিয়ে সেইম সিরিয়াল নাম্বারটা লিখবে এখানে, তারপর ঘণ্টা খানেক সময় নিবে সত্যায়িত করে ডেলিভারি দিবে ।।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িতঃ
শিক্ষাবোর্ডে সত্যায়িত করার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সত্যায়িত করতে হবে। শিক্ষাবোর্ড থেকে না করলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে করানো যাবে না। প্রথমেই বলে নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবণে হয়না মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে হয়। যদি মেট্রোরেল দিয়ে আসেন তাহলে বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্টেশনে নামার পর সেক্রেটারিয়েট লিংক রোড হয়ে ২ মিনিট হাটলে হাতের ডানে পড়বে। তাছাড়া কেউ না চিনলে ঐখানের কোনো পুলিশকে জিজ্ঞেস করবেন নাহলে দালালের ফাদে পড়তে পারেন। সবাই চেষ্টা করবেন সকাল ৮টার আগে যাইতে তাহলে একদিনে কাজ সম্পুর্ণ করতে পারবেন। সকাল ১০ টা থেকে ১০জন করে গেইটম্যান নেওয়া শুরু করে। তারপর লিফট এর ৭ নাম্বার তথা ৮ম তলায় ৮০৮ তলায় যাবেন যেখানে জেনারেল বোর্ড এর গুলো করা হয়। প্রথমে নাম এন্ট্রি করবে তারপর সাথে সাথে সিল এবং স্বাক্ষর দিয়ে দিবে। কাজ শেষ হয়ে গেলে সবাই ভালো করে চেক করবেন সব সিল এবং স্বাক্ষর আছে কিনা। এইখানে পেইজের কোনো লিমিট নাই। এখানে কাজ শেষ করে লিফট এর ১১ নাম্বার তথা ১২ম তলায় গিয়ে ১ তলা পায়ে হেঁটে তথা ১৩ তলায় সিঁড়ির পাশেই রুম লেখা আছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখানেই জমা নেয়, জমা নিয়ে একটি টোকেনে একটা নাম্বার লিখে দিবে এটা সংরক্ষণ করে রাখবেন এটা সনদ ও মার্কশিট নেওয়ার সময় দিতে হবে। বলে রাখি এখানে জমা দেয়ার সময় এক সেট ফটোকপি দিতে হয় যেটি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ফটোকপি সত্যায়িত করা হয় তা থেকে ফটোকপি করতে হবে । আমি মেইন কপি থেকে ফটোকপি করেছিলাম হয় নাই, আবার নিচে গিয়ে করে আনা লাগলো। পরে তারা একটা সময় বলবে কোন সময় নিতে হবে, কিন্তু আপনি একটু তাড়াতাড়ি করতে চাইলে যে টোকেন দিবে এটা নিয়ে ৮০১ নাম্বার রুমে গিয়ে আপনার ফাইল সিল করিয়ে নিবেন তারপর ৯ তলায় ৯০৯ বা ৯১০ নাম্বার রুমে গিয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নিতে পারবেন। তারপর সবগুলো পেইজ চেক করবেন ঠিক মতো স্বাক্ষর ও সিল করা হয়েছে কিনা । সব কিছু ঠিক থাক হয়ে থাকলে এখানেই শেষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর কাজ ...।।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িতঃ
উপরের কাজ গুলো শেষ হওয়ার পর কাজ হলো ফরেন মিনিস্ট্রি বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নেমে হাতের বাম দিকে গিয়ে মেইন রোড পার হয়ে আবার বাম দিকে যাবেন ৪-৫ মিনিট হাটলেই পেয়ে যাবেন। প্রেসক্লাবের কাছে অবস্থিত।(গুগল ম্যাপে Foreign Ministry Attastation লিখে সার্চ দিলেই লোকেশন পেয়ে যাবেন)। এইখানে মেইন গেইট ধরে না ডুকে পাশে দেখবেন ছোট আরেকটি গেইট আছে ওইটা দিয়ে ডুকে প্রথমেই টোকেন রিডেবল মেশিন থেকে টোকেন নিতে হবে, তারপর সিরিয়াল মতো ডাকবে। টোকেন নিয়ে আরামে বসে থাকবেন এসির রুমে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিদিন ৫০০-৫৩০ টা টোকেন লিমিট থাকে এবং সকাল ৯:৩০ থেকে টোকেন দেওয়া শুরু হয় ১২টা পর্যন্ত, কিন্তু লিমিট থাকে তাই ১১:৩০ এর ভিতরেই সব টোকেন শেষ হয়ে যায়। জমা নেয়ার সময়ে টোকেনের কিছু অংশ ছিড়ে ডকুমেন্টস এর সাথে স্টাপ্লার করে দেয়। অন্যটি আপনার কাছে রাখতে হবে এটা হারানো যাবে না। একটা ফটো তুলে রেখে দিবেন সেইফটির জন্য। এখানে বলে রাখি ফরেন মিনিস্ট্রিতে একদিনে ২০ পেইজ এর বেশি করা যায় না। ডকুমেন্টস জমা দেয়ার পর ২০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যে হয়ে যাবে কাজ এখানে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আপনি যেদিন সত্যায়িত করবেন মন্ত্রণালয়ের ঐদিনের একটা কোড আপনার একটা পেইজে লিখে দিবে,বাকি পেইজে আপনি লিখে নিবেন সকল পেইজে ।।
বি.দ্র: তিনটি মন্ত্রণালয়ের কাজই ফ্রীতে করতে পারবেন। তাই কোনো দালালের খপ্পরে পড়বেন না। অনেক দরবেশ বাবা বলবে লাইন ধরা লাগবে না, সময় লাগবে না এদের হাতে পড়বেন না। তাছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কাজ শেষ হলে ভালো করে সীল এবং স্বাক্ষর ভালোভাবে চেক করে নিবেন। যদি না থাকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাকে বলবেন সাথে সাথে করে দিবে।। ডিপ্লোমা স্টুডেন্টরা সব কাজ শেষ করতে সাধারণত ৫-৭ দিন সময় লাগবে ।।
নেক্সট পোস্টে আলোচনা করবো কিভাবে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সমমান সার্টিফিকেট তুলবেন এবং সত্যায়িত করবেন ।।